Monday, March 26, 2012

BNP's Vicious Lie about Independence Declaration



বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার খবর অলিই জিয়াকে জানান
সমকাল প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার খবর জিয়াউর রহমানকে প্রথম অবহিত করেন কর্নেল অলি আহমদ বীরবিক্রম (অব.)। সেনাবাহিনীতে চাকরিরত থাকাকালীন কর্নেল অলির বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনের (এসিআর) পঞ্চম পৃষ্ঠায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

এসিআর থেকে জানা গেছে, বিএসএস-৯৭০৬ অলি আহমদ সম্পর্কে ১৯৭৪ সালের ৮ মার্চ ব্রিগেড কমান্ডার মীর শওকত আলীর ইংরেজিতে করা মন্তব্য ছিল_ 'এই কর্মকর্তার অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতা। তিনি কঠোর পরিশ্রমী এবং পদমর্যাদা অনুযায়ী তার ওপর অর্পিত দায়িত্বের চেয়েও বেশি দায়িত্ব পালনে সক্ষম। সঠিক নির্দেশনা পেলে তিনি সেনাবাহিনীতে সম্পদ হিসেবে পরিগণিত হবেন। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান উল্লেখযোগ্য। বস্তুত তিনিই প্রথম কর্মকর্তা, যিনি ঝুঁকি নিয়ে নিজ উদ্যোগে একাত্তরের ২৫/২৬ মার্চ রাতে স্বাধীনতার ঘোষণার খবর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে অবহিত করেন।' এদিকে ২০ আগস্ট ১৯৭৪ জিয়াউর রহমান (ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ) হিসেবে একই পৃষ্ঠায় ইংরেজিতে মন্তব্য করেন_ 'তিনি খুবই অনুগত, সাহসী ও চৌকস অফিসার। তিনি অত্যন্ত বুদ্ধিমান ও উদ্যমী।'


এই গোপন প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে অনেকেই বলেছেন_ ১৯৭১ সালের ২৫/২৬ মার্চ মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে জিয়াউর রহমানকে অলি আহমদের খবর দেওয়া প্রসঙ্গে মীর শওকতের এই প্রত্যয়ন এবং জেনারেল জিয়ার তাতে অনুস্বাক্ষরের পর জিয়া কি আর স্বাধীনতার ঘোষক থাকেন?


Source: http://www.samakal.net/print_edition/details.php?news=13&view=archiev&y=2012&m=03&d=26&action=main&option=single&news_id=247324&pub_no=1003

BNP's Vicious Lie about the Declaration of Independence

Prothom Alo

কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা

মোহাম্মদ মাহবুবুল হক | তারিখ: ২৬-০৩-২০১২

মুক্তিযুদ্ধের সূচনাতেই ২৬ মার্চ দুপুরে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ঘোষিত স্বাধীনতার বেতার ঘোষণা প্রচারের জন্য ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’-এর গোড়াপত্তন হয়। পাকিস্তান সরকার কর্তৃক পরিচালিত সামরিক গণহত্যার খবর, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা এ বেতারকেন্দ্র থেকেই প্রচারিত হয়। এ বেতারকেন্দ্র থেকে সর্বশক্তি দিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর মোকাবিলা করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। গণহত্যা শুরুর আগে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক বিদেশি সাংবাদিকদের বহিষ্কার এবং সংবাদ প্রচার ও প্রকাশের ওপর সামরিক আইনের কড়াকড়ির কারণে এ সময়ের আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যমকে বাংলাদেশ বা পূর্ব পাকিস্তানের বিষয়গুলোর জন্য প্রধানত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত বিষয়ের ওপরই নির্ভর করতে হয়। পাকিস্তান সরকারের প্রচারণার বিরুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রচারযুদ্ধে নেমে মুক্তিযুদ্ধের ‘দ্বিতীয় ফ্রন্ট’ হিসেবে কাজ করে।

চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র আগ্রাবাদে অবস্থিত বেতার ভবন ও কালুরঘাট ট্রান্সমিটার—এ দুটির সমন্বয়ে গঠিত। আগ্রাবাদ বেতার ভবন থেকে অনুষ্ঠান টেলিফোন লাইন, এফএম ট্রান্সমিটার অথবা এক্সটিএলের মাধ্যমে কালুরঘাট ট্রান্সমিটারে পাঠানো হতো। কালুরঘাট ট্রান্সমিটার তা গ্রহণ করে ৩৪৪.৮ মিটার বা ৮৭০ কিলোহার্জে তা প্রচার করে। কালুরঘাট সম্প্রচারকেন্দ্রে একটি ছোট স্বয়ংসম্পূর্ণ ইমারজেন্সি স্টুডিও ছিল। চট্টগ্রাম বেতারের প্রচারক্ষমতা ছিল ১০ কিলোওয়াট, ইমার্জেন্সি স্টুডিও ব্যবহারের সময়ও ওই ১০ কিলোওয়াট ক্ষমতাই ব্যবহূত হতো। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রচারক্ষমতাও ছিল ১০ কিলোওয়াট। কালুরঘাট সম্প্রচারকেন্দ্রটির অবস্থান চান্দগাঁও এলাকায়, বর্তমানে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালের উত্তর পাশে অবস্থিত।

২৫ মার্চ মধ্যরাতের পর, অর্থাত্ ২৬ মার্চের প্রথমার্ধে স্বাধীনতার ঘোষণা পাওয়ার পর চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতারা, এমনকি স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ সাধারণ জনগণ তা হাতে লিখে, সাইক্লোস্টাইল করে, মাইকিং করে ব্যাপকভাবে প্রচার করে। ২৬ মার্চ সকালে আওয়ামী লীগ ও চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের নেতারা আখতারুজ্জামান বাবুর বাসভবন ‘জুপিটার হাউস’-এ এক বৈঠকে মিলিত হন এবং স্বাধীনতার ঘোষণা চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেন। ডা. জাফর ঘোষণাটি বাংলায় মুসাবিদা করেন এবং কমিটি তা অনুমোদন করে। সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জহুর আহমদ চৌধুরী, এম আর সিদ্দিকী, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম চৌধুরীসহ চট্টগ্রামের এমএনএ/এমপিএদের মধ্যে যাঁরা চট্টগ্রাম শহরে আছেন, তাঁরা একত্রে বেতারকেন্দ্রে যাবেন এবং জহুর আহমদ চৌধুরী স্বাধীনতার ঘোষণা বেতারে প্রচার করবেন।

উল্লেখ্য, ২৬ মার্চ প্রভাতি অধিবেশনের জাতীয় অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে সামরিক আইনের ধারাসমূহ প্রচারিত হওয়া মাত্রই চট্টগ্রাম বেতারের কর্তব্যরত স্বাধিকার চেতনায় উদ্বুদ্ধ কর্মীরা তাত্ক্ষণিকভাবে আগ্রাবাদ বেতার ভবন ও কালুরঘাট সম্প্রচার ভবন ত্যাগ করেন।

২৬ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র মোট ১৩টি অধিবেশন সম্প্রচার করে বলে জানা যায়। এর মধ্যে ২৬ মার্চের তিনটি ও ২৭ মার্চের প্রভাতি অধিবেশনের উদ্যোক্তাদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ছিল না এবং তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ বেতারের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও কালুরঘাট সম্প্রচারকেন্দ্রের স্বয়ংসম্পূর্ণ স্টুডিও সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না। এ জন্য এ পর্যায়ের উদ্যোক্তারা বেতার চালু করার জন্য প্রথমে আগ্রাবাদ বেতার ভবনে যান। আগ্রাবাদ বেতার ভবন চট্টগ্রাম বন্দরের কাছাকাছি স্থানে অবস্থিত। চট্টগ্রাম বেতারের আঞ্চলিক পরিচালক, সহকারী আঞ্চলিক পরিচালক, আঞ্চলিক প্রকৌশলীদের পরামর্শে চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানরত পাকিস্তানি যুদ্ধজাহাজের শেলিং আওতা থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থিত কালুরঘাটের ইমার্জেন্সি স্টুডিও থেকে বেতার চালু করা হয়। পরবর্তী অধিবেশনগুলো এখান থেকেই প্রচারিত হয়।

২৬ মার্চের প্রথম অধিবেশন: স্বাধীনতার ঘোষণা বেতারে প্রচারের লক্ষ্যে ১২টার পর আতাউর রহমান খান কায়সার, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মীর্জা আবু মনসুর, ডা. এম এ মান্নান, এম এ হান্নান, শাহ-ই-জাহান চৌধুরী, রাখাল চন্দ্র বণিক প্রমুখ আগ্রাবাদ বেতার ভবন হয়ে কালুরঘাট সম্প্রচারকেন্দ্রে যান। অনুষ্ঠান উপস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয় ছাত্রনেতা রাখাল চন্দ্র বণিককে। বেলা দেড়টা-দুইটার দিকে রাখাল চন্দ্র বণিক বেতারে ঘোষণা করেন, ‘চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র। একটি বিশেষ ঘোষণা। একটু পরেই জাতির উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেবেন চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক জনাব এম এ হান্নান। আপনারা যাঁরা রেডিও খুলে বসে আছেন, তাঁরা রেডিও বন্ধ করবেন না।’ এ ঘোষণাটি রাখাল চন্দ্র বণিকের কণ্ঠে বারবার প্রচারিত হয়। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাসহ ডা. জাফরের মুসাবিদাকৃত ভাষণটি এম এ হান্নান প্রচার করেন। এ ভাষণটি ডা. মান্নানসহ আরও কয়েকজনের কণ্ঠে প্রচার করা হয়েছিল বলে জানা যায়। অনুষ্ঠান ঘোষণাসহ এ অধিবেশনের স্থায়িত্বকাল ছিল প্রায় ১৫ মিনিট। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত এই প্রথম এ অধিবেশনে কারিগরি সহায়তা দিয়েছিলেন আঞ্চলিক প্রকৌশলী মীর্জা নাসির উদ্দিন, বেতার প্রকৌশলী আবদুস সোবহান, বেতার প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন এবং মেকানিক আবদুস শুকুর।

লক্ষণীয় যে ২৬ মার্চ সকালে সংগ্রাম পরিষদের সিদ্ধান্ত ছিল: জহুর আহমদ চৌধুরী স্বাধীনতার ঘোষণা বেতারে প্রচার করবেন; কিন্তু স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে জহুর আহমদ চৌধুরীর উপস্থিতি পাওয়া যায় না। যাঁরা বেতারকেন্দ্রে যান, তাঁরা ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। জহুর আহমদ চৌধুরী ছিলেন শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি। দীর্ঘদিন থেকে চট্টগ্রাম শহর ও জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল, এটা কি সেই দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ? অবশ্য বেতারকেন্দ্রে যাওয়া নেতাদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন, তাঁরা জহুর আহমদ চৌধুরীর বাসায় গিয়েছিলেন; কিন্তু তিনি অসুস্থতার অজুহাতে বেতারকেন্দ্রে যেতে রাজি হননি।

বেতারে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচারের পর (কলামিস্ট) ইদরিস আলমের ভাষ্যমতে, জহুর আহমদ চৌধুরী একজন সেনা কর্মকর্তা কর্তৃক স্বাধীনতার বেতার ঘোষণা প্রচারের ওপর জোর দেন। অতঃপর নেতারা প্রথমে ক্যাপ্টেন রফিকের (পরে মেজর ও মন্ত্রী) সঙ্গে যোগাযোগ করেন; কিন্তু তিনি রণাঙ্গন ছেড়ে শহরতলিতে অবস্থিত বেতারকেন্দ্রে যেতে রাজি হননি। এরপর মেজর জিয়ার (পরে লে. জেনারেল ও রাষ্ট্রপতি) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

দ্বিতীয় অধিবেশন: ২৬ মার্চ সকালে চট্টগ্রাম বেতারের পাণ্ডুলিপিকার বেলাল মোহাম্মদ ও তাঁর বন্ধু ফটিকছড়ি কলেজের উপাধ্যক্ষ আবুল কাসেম সন্দীপ, বেতারের অনুষ্ঠান প্রযোজক আবদুল্লাহ আল ফারুক সংগ্রাম পরিষদের আনুকূল্যে বেতার চালু করার উদ্দেশ্যে স্টেশন রোডে শহর আওয়ামী লীগের অফিস ও সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র ‘রেস্ট হাউসে’ যান। এখানে অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদ তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। তাঁরা বেতারের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ক্যাপ্টেন রফিকের সঙ্গে দেখা করেন। অতঃপর বেতার চালু করার জন্য কালুরঘাট সম্প্রচারকেন্দ্র হয়ে আগ্রাবাদ বেতার ভবন হয়ে পুনরায় কালুরঘাটে গিয়ে বেতার চালু করেন। বেতার চালু করা পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন কাজী হোসনে আরা, ডা. আনোয়ার আলী, ওয়াপদার ইঞ্জিনিয়ার আসিকুল ইসলাম, ডা. সুলতান-উল-আলম, কবি আবদুস সালাম, ডা. আবু জাফর ও এম এ হান্নান।

২৬ মার্চ সন্ধ্যা সাতটা ৪০ মিনিটে ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র থেকে বলছি’—এ বাক্য উচ্চারণের মাধ্যমে শুরু হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের দ্বিতীয় অধিবেশন। কবি আবদুস সালাম কর্তৃক কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় মূল অধিবেশন। এরপর ডাক্তার আনোয়ার আলীর কাছ থেকে পাওয়া বঙ্গবন্ধুর নামাঙ্কিত ‘জরুরি ঘোষণা’ শীর্ষক স্বাধীনতার ঘোষণা-সম্পর্কিত প্রচারপত্রটি বিভিন্ন কণ্ঠে বারবার প্রচারিত হয়। বহির্বিশ্বের সাহায্য কামনায় ইংরেজিতে নিউজ বুলেটিনে কণ্ঠ দেন বেতারের প্রযোজক আবদুল্লাহ্ আল ফারুক। কবি আবদুস সালাম স্বাধীনতার পক্ষে ও পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলার সর্বস্তরের জনগণকে যার হাতে যা আছে তা নিয়ে প্রতিরোধযুদ্ধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দেন। এ সময় এম এ হান্নান বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পুনঃপ্রচার করেন। গণসংগীতের মাধ্যমে আধা ঘণ্টা স্থায়ী এ অধিবেশনের সমাপ্তি ঘটে। পরদিন সকাল সাতটায় আবার অনুষ্ঠান প্রচারের ঘোষণা দিয়ে অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষিত হয়। বেতারে কারিগরি সহায়তা দেন বেতার প্রকৌশলী মুসলিম খান, দেলোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ মুছা ও মেকানিক আবদুস শুকুর।

তৃতীয় অধিবেশন: বেলাল মোহাম্মদের বন্ধু মাহমুদ হোসেন, বেতারের নিজস্ব শিল্পী রঙ্গলাল দেব চৌধুরী ও ঘোষক কবির, আগ্রাবাদ হোটেলের কর্মাধ্যক্ষ ফারুক চৌধুরী প্রমুখের উদ্যোগে রাত ১০টার দিকে তৃতীয়বারের মতো বেতার চালু হয়। এ অধিবেশন সম্পর্কে বিশেষ তথ্য পাওয়া যায় না। ২৬ মার্চ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়।

২৭ মার্চের প্রথম অধিবেশন: ২৭ মার্চ সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ প্রতিরোধ কেন্দ্রের ছাত্রনেতারা বেতার চালু করার সিদ্ধান্ত নেন। ছাত্রনেতাদের মধ্যে আলোচনাক্রমে মেডিকেল কলেজের মাহফুজুর রহমান, বেলায়েত হোসেন, আবু ইউসুফ চৌধুরী, শাহ-ই-জাহান চৌধুরী, পলিটেকনিক্যালের (ভিপি) আবদুল্লাহ আল হারুন, আজিজ, খুরশিদসহ অনেকে কালুরঘাট সম্প্রচারকেন্দ্রে যান। এ সময় ডা. এম এ মান্নান এমপিএ ও আবুল কাসেম সন্দীপ তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। বেতারকেন্দ্র চালু করে প্রথম ভাষণ দেন ডা এম এ মান্নান। এরপর সংবাদ পাঠ করেন শাহ-ই-জাহান চৌধুরী ও মাহফুজুর রহমান, ইংরেজি সংবাদ পাঠ করেন বেলায়েত হোসেন এবং মাহফুজুর রহমান সংবাদ বুলেটিন পড়েন। আবদুল্লাহ আল হারুন একটি ভাষণ দেন। সবশেষে ইউসুফ চৌধুরী একটি প্রতিবেদন পড়েন। এ অধিবেশনে দেশাত্মবোধক গানও প্রচার করা হয়। ঘণ্টা দু-তিনেক থাকার পর উদ্যোক্তারা শহরে যুদ্ধের অন্যান্য কাজে চলে যান। এ অধিবেশনে মেকানিক আবদুস শুকুরও উপস্থিত ছিলেন।

২৭ মার্চের ২য় (সান্ধ্য) অধিবেশন: ২৭ মার্চ সকালে সংগঠকদের মধ্যে বেলাল মোহাম্মদ তাঁর বন্ধু মাহমুদ হোসেন, কাজী হাবিব উদ্দীন, এয়ার মাহমুদ, ফারুক চৌধুরী, ওসমান গণিকে নিয়ে বেতারের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বোয়ালখালীর ফুলতলীতে অবস্থানরত মেজর জিয়ার কাছে যান। মেজর জিয়া বেতারের নিরাপত্তার জন্য একটি সেনাদল পাঠান। বিকেল পাঁচটার মধ্যে সেনারা বেতারকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে এলাকাটির নিরাপত্তা জোরদার করেন। সন্ধ্যার মধ্যে মেজর জিয়া বেলাল মোহাম্মদ ও তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে বেতারকেন্দ্রে উপস্থিত হন। এরপর মেজর জিয়া স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তাঁর প্রথম ঘোষণাটি দেন।

মেজর জিয়ার দ্বিতীয় ঘোষণা: ২৮ মার্চ মেজর জিয়া নিজেকে ‘অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধান’ দাবি করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তাঁর দ্বিতীয় ঘোষণাটি দেন।

মেজর জিয়ার তৃতীয় ঘোষণা: ২৮ মার্চের অধিবেশনে মেজর জিয়া নিজেকে ‘Provisional head of the Swadhin Bangla Liberation Government’ বলে ঘোষণা করলে রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী ও সচেতন মহলে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ এ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধকে সেনা-অভ্যুত্থান হিসেবে প্রচার করার সুযোগ পেত। এ জন্য তাঁরা এটার সংশোধনী প্রচারে সক্রিয় হয়েছিলেন। পাকিস্তানের একসময়কার শিল্পমন্ত্রী ও বিশিষ্ট শিল্পপতি এ কে খান এবং চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের নেতারা, বিশেষ করে জহুর আহমদ চৌধুরী, এম আর সিদ্দিকী, মীর্জা মনসুর, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, এম এ হান্নান প্রমুখ যৌথভাবে একটি ঘোষণা তৈরি করেন। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও মীর্জা মনসুর ২৯ মার্চ রাতে এ ঘোষণাটি নিয়ে মেজর জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। মেজর জিয়াসহ তাঁরা তিনজন বেতারকেন্দ্রে আসেন, কিন্তু তখন সেখানে বেতারের কর্মীরা ছিলেন না। মেজর জিয়া, মীর্জা মনসুর ও মোশাররফ হোসেন বেতার চালু করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তখন মেজর জিয়া সেনাদের বেতারকর্মীদের ধরে আনার নির্দেশ দেন। ২৯ মার্চ রাতে সেকান্দর হায়াত খান ও তাঁর ভাই হারুন-অর-রশীদ খান তাঁদের বাড়িতে বেতারকর্মীদের থাকা ও খাওয়ার আয়োজন করেছিলেন। ২৯ মার্চ সান্ধ্য অধিবেশনের পর বেতারকর্মীরা বেতারকেন্দ্র বন্ধ করে সেকান্দর হায়াত খানদের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেনারা তাঁদের গভীর রাতে সেখান থেকে ধরে বোয়ালখালীতে মেজর জিয়ার কাছে নিয়ে যান। ৩০ মার্চ প্রভাতি অধিবেশনে মেজর জিয়া ২৮ মার্চের ঘোষণা সংশোধন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সরকার গঠন এবং তাঁর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত উল্লেখযোগ্য অন্যান্য বিষয়: ২৫ মার্চের মধ্যরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচারের পর ২৭ মার্চ পাকিস্তান সরকার বেতারে বঙ্গবন্ধুর গ্রেপ্তারের খবর প্রচার করে। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শুনলে জনগণের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ও হতাশা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা ছিল। এ জন্য স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তা অস্বীকার করে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় বিপ্লবী পরিকল্পনা কেন্দ্র থেকে মুক্তিবাহিনীকে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন। স্পষ্টতই এ পরস্পরবিরোধী বক্তব্য বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করেছিল। ২৮ মার্চ পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের সচিত্র খবর সংবাদপত্রে প্রকাশ করে তা প্রমাণ করতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তা বরাবরই অস্বীকার করে, এমনকি বঙ্গবন্ধু কর্তৃক সরকার গঠন এবং তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় বিপ্লবী পরিকল্পনা কেন্দ্রে অবস্থান করছেন বলে প্রচার করা হয়।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত বিভিন্ন প্রোপাগান্ডার মধ্যে অন্যতম ছিল মুক্তিবাহিনী কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও সামরিক আইন প্রশাসক লে. জেনারেল টিক্কা খান ও তাঁর সঙ্গীদের নিহত হওয়ার খবর। এ-সম্পর্কিত প্রথম খবরটি প্রচারিত হয় ২৭ মার্চ। এ প্রোপাগান্ডায় বিবিসিসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রভাবশালী গণমাধ্যম প্রভাবিত হয়েছিল।

বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকা ইত্যাদির বরাত দিয়েও বেশ কিছু প্রোপাগান্ডা চালানো হয়। পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশের পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং পাকিস্তানি বাহিনীর মধ্যে অন্তর্বিরোধের খবরও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে একাধিকবার প্রচার করা হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হামলার মুখে বাঙালির মুক্তিসংগ্রামে বাঙালি একা নয়, বিশ্বজনমত বাঙালির পক্ষে—স্বাধীনতাকামী বাঙালি জনগণের মনোবল চাঙা রাখার জন্য স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে এ ধরনের কিছু খবর প্রচার করা হয়।

২৮ মার্চের প্রভাতি অধিবেশন থেকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত অধিবেশন প্রচারিত হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়: প্রথম অধিবেশন সকাল নয়টার পর, দ্বিতীয় অধিবেশন বেলা একটার পর এবং সন্ধ্যা সাতটার পর তৃতীয় অধিবেশন। নির্দিষ্ট সময়ে অনুষ্ঠান প্রচার সম্ভব ছিল না বলে শ্রোতাদের উদ্দেশে এভাবে আগাম ঘোষণা দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগ ও চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের নেতারা ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ চালু করলেও তার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ কিংবা কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। অবশ্য বেতার চালু হওয়ার শুরু থেকে এর সঙ্গে সামগ্রিকভাবে জড়িত ছিলেন কালুরঘাট সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক সেকান্দর হায়াত খান। তিনি ও তাঁর ভাই হারুন-অর-রশিদ খানের নেতৃত্বে বেতারকেন্দ্রের আশপাশের লোকজন বেতারকর্মী ও নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেনাদের খাবারের ব্যবস্থা করত।

প্রথম দিকে বেতারের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন ইপিআর সেনারা। ২৭ মার্চের বিকেল থেকে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট বেতারের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয়। ২৭ মার্চের সান্ধ্য অধিবেশনের পূর্ব পর্যন্ত কেন্দ্রের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম কিংবা কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ছিল না। এর পর থেকে বেতারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়াও সামরিক কর্মকর্তারা বেতারে প্রচারিতব্য বিষয়গুলো পড়ে অনুমোদন করে দিতেন।
৩০ মার্চ প্রভাতি অধিবেশনে অনুষ্ঠানের সূচনায় ও সমাপ্তিতে ঢাকা রেকর্ডের ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানটির এপিঠ-ওপিঠ বাজানো হয়। সূচকসংগীত হিসেবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে শেষ দিন পর্যন্ত ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানটির প্রচার চালু ছিল। নভেম্বর থেকে সমাপ্তিতে জাতীয় সংগীত প্রচার করা হয়। ৩০ মার্চ প্রভাতি অধিবেশন থেকেই সমাপ্তি ঘোষণায় ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন, আমি তখনই কোনো জাতিকে সাহায্য করি, যখন সে জাতি নিজেকে সাহায্য করে’—এ বাক্যটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শেষ দিন পর্যন্ত প্রচলিত ছিল।

৩০ মার্চ দুপুরে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর বোমা হামলায় বেতারকেন্দ্রের বিদ্যুত্ সরবরাহ, বৈদ্যুতিক চ্যানেলগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। কালুরঘাট সম্প্রচারকেন্দ্রে ১০ কিলোওয়াট ট্রান্সমিটার ছাড়াও এক কিলোওয়াটের একটি স্বতন্ত্র ট্রান্সমিটার ছিল। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রচার অব্যাহত রাখার জন্য এ ট্রান্সমিটারটি ডিসমেটাল করে প্রথমে পটিয়া, পরে পটিয়া থেকে রামগড় হয়ে ভারতের আগরতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। শুরু হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের দ্বিতীয় পর্যায়।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নামকরণ: ২৬ মার্চের প্রথম অধিবেশনে সংগঠকেরা এ বেতারকেন্দ্রকে ‘চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র’, ‘বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র’ ইত্যাদি বলে উল্লেখ করেন। রাখাল চন্দ্র বণিক বলেন, প্রথমে ‘চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র’ বলে ঘোষণা দিলেও পরে ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র’ বলে তিনি ঘোষণা করেন। এ প্রসঙ্গে তত্কালীন বেতারের মেকানিক আবদুস শুকুর বলেন, তাঁরা খুব নার্ভাস ছিলেন এবং তাড়াহুড়ো করছিলেন। অন্যকিছু না বলে ‘বিপ্লবী বেতার থেকে বলছি’ বলে একজন তরুণ ঘোষণা দেয়। ২৬ মার্চের দ্বিতীয় অধিবেশনে এটাকে একটি গুপ্ত বেতারকেন্দ্র হিসেবে শুধু বেতারকেন্দ্রের নাম ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র’ বলে প্রচার করা হয়। ২৬ মার্চ সন্ধ্যা সাতটা ৪০ মিনিটে ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র থেকে বলছি’—এ বাক্যের মাধ্যমে ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের’ দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। ২৬ মার্চ ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র’ নামকরণ করা হলেও এ নামটি সব সময় হুবহু ব্যবহার করা হয়নি। যেমন, ২৮ মার্চের প্রভাতি অধিবেশনে আবুল কাসেম সন্দীপের পড়া সংবাদ বুলেটিনে ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র’, ‘বাংলা বেতার কেন্দ্র’, ‘বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র’ ইত্যাদি নাম উল্লেখ করা হয়। ২৮ মার্চের দুপুরের অধিবেশন থেকে মেজর জিয়ার নির্দেশে লে. শমশের মবিনের (পরে পররাষ্ট্রসচিব ও রাষ্ট্যদূত) প্রস্তাবক্রমে বেতারের নাম থেকে ‘বিপ্লবী’ শব্দটি বাদ দেয়া হয়। বেতারের নাম হয় ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত ঘোষণা থেকেই বাংলাদেশ ও বিশ্বের জনগণ পাকিস্তানি সামরিক জান্তা কর্তৃক বাংলাদেশে পরিচালিত বর্বর গণহত্যা এবং এ পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ঘোষিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা জানতে পারে। স্বাধীনতার বেতার ঘোষণা ছাড়াও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ‘স্বাধীন বাংলা মুক্তিবাহিনী’ গঠন এবং ‘বাংলাদেশ সরকার’ প্রতিষ্ঠার কথা প্রথম প্রচারিত হয়—এ দুটি সংগঠন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অনেক পরে। ১০ কিলোওয়াটের ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’-এর প্রচারক্ষমতা ছিল মাত্র ৬০ বর্গকিলোমিটার। এ জন্য পুরো দেশের জনগণ এ কেন্দ্রের অনুষ্ঠান সরাসরি শুনতে পায়নি। তবে বৈশ্বিক গণমাধ্যম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ঘোষণাগুলো ব্যাপকভাবে প্রচার করায় দেশবাসী ও বিশ্ববাসী বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূচনাপর্বের কথা জানতে পারে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠালগ্নে বেতার প্রকৌশলী আবদুস সোবহান ও দেলোয়ার হোসেন এবং কাস্টসম কর্মকর্তা এম এ হালিমও সংশ্লিষ্ট ছিলেন। বেলাল মোহাম্মদের মতে, নিম্নোক্ত দশজন বেতারকর্মী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সূচনা থেকে শেষ পর্যন্ত স্বতঃপ্রণোদিতভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন: মোহাম্মদ আমিনুর রহমান, কাজী হাবিব উদ্দীন আহমদ, আ ম শারফুজ্জামান, মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী, সৈয়দ আবদুস শাকের, মুস্তফা আনোয়ার, আবুল কাশেম সন্দ্বীপ, রাশেদুল হোসেন, আবদুল্লাহ আল ফারুক ও বেলাল মোহাম্মদ। তাঁরা ‘শব্দসৈনিক’ নামে পরিচিত।

ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হক: অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

Source: http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-03-26/news/235578

Thursday, March 15, 2012

Khaleda Zia took money from Pakistan's notorious ISI

Asghar Khan’s petition finally comes
up for hearing
Afzal Khan (Dateline Islamabad)

3 March 2012
 
After a very long wait the petition filed by Air Marshal Asghar Khan against funds doled out by the establishment through the Inter-Services Intelligence (ISI) to a select group of anti-Benazir Bhutto politicians in 1990 finally came up for hearing before the Supreme Court on Wednesday.
The case was, however, adjourned because of absence of certain key witnesses amid warning by the Chief Justice that notices must be issued to former chief of ISI Gen. Asad Durani, and former chief of Mehran Bank Younus Habib to appear before the court in the next hearing on March 8. By his own admission, Gen. Durrani had directly delivered the money to individual politicians and groups including Pakistan Muslim League’s Nawaz Sharif as ordered by the “boss”, meaning the then army chief Gen. Mirza Aslam Beg. In turn Gen. Beg had named the ‘chief executive’ (President Ghulam Ishaq Khan) for supervising the entire exercise. Nobody thought of ethnical or legal violations of their secret proceedings. Its sinister purpose was to defeat the Pakistan People’s Party (PPP) under Benazir Bhutto in the 1990 elections. A total of Rs140 million was disbursed after Mehran Bank illegally advanced it to the ISI account. Another Rs50 million was allegedly paid to Bangladesh’s Khalida Zia to help her in polls against Hasina Wajid’s Awami League generally perceived by Pakistan’s security establishment as pro-India.
The ISI had brought together various conservative and religious parties and groups under the banner of Islami Jamhoori Ittehad (IJI) to collectively face the PPP. It effectively checked the Benazir tide in 1988 denying her absolute majority. She got 92 seats against 54 by the IJI while 102 votes were needed to form the government. In Punjab, the major battleground, the IJI got 109 seats against 105 of the PPP while 44 were elected as independent. President Ghulam Ishaq Khan withheld invitation to Benazir to try to constitute a coalition until Nawaz Sharif succeeded in luring the independents to lead the provincial government. Ishaq Khan finally dismissed Benazir government in less than two years and ordered fresh elections in 1990 for which financial support was provided to IJI politicians. Apart from that, arrangement to completely demolish the PPP was tightened by establishing an election cell in the Presidency under Gen. Rifaqat. Benazir could get only a limited number of seats from Sindh and helplessly declared that the elections were massively “stolen”. It is a shameful chapter in country’s history in which the ‘troika’ of President, prime minister and army chief joined hands to secure desired results through brazenly dubious means. Gen. Durrani and Gen. Beg acted in direct contravention of their oath and willingly obeyed illegal orders.
Asghar Khan filed a petition against the illegal disbursement of funds to the IJI politicians. Gen. Durrani in his testimony gave details of amounts given to each leader. The court reserved further action after recording initial evidence. The resurrection of the case has vindicated Supreme Court’s credentials as a neutral and independent entity not leaning against or towards any party. The court is unlikely to punish anybody but would once again expose the interference of security establishment in political matters in violation of the constitution. Imran, who has pressed for revival of the case, apparently wants to retaliate against PML-N for its campaign against him that he is being propped up by the ISI. The case will instead expose Sharif and his allies for receiving money from agencies. It will also show to the nation how the establishment operates to ensure that political system does not stabilise.
Former ISI chief Gen. Hamid Gul unabashedly takes credit for fathering the IJI in 1988 to stem Benazir’s tide. “She would have swept the polls,” he once admitted. A weak coalition under Benazir became an easy prey for Ishaq Khan to be sent home packing within less than two years. The decade of 1990s saw similarly fragile arrangements alternating after every two years and being dispensed with by the president in collaboration with the army chief. Democracy was thus not allowed to take firm roots and was given bad name for incompetence and corruption.
The Supreme Court has been persistently dared and even criticised by the PPP for reluctance to take up the petition because it targets the security agencies and their once favourite politician Nawaz Sharif. Imran recently moved the court to revive the hearing. Theoretically such a hearing has only a historical importance and provides an opportunity for exposing Shairf. But the recourse to past history only diverts attention from real issues confronting the people.
Winston Churchill had once warned politicians: “I consider that it will be found much better by all parties to leave the past to history, especially as I propose to write that history myself.” While Imran will be able to avenge the ‘campaign of vilification’ launched against him by Nawaz Sharif’s PML-N that he is being propelled by the ISI, the PPP shall have the opportunity to expose Sharif who continues to target Asif Ali Zardari for his alleged corruption. However, if, beyond these short-term gains, the case serves a higher purpose of ensuring cleaner and untainted politics in the future, the hearing of Asghar Khan’s petition would promote a noble objective.