Thursday, October 1, 2015

Maududi's Son Says Jamaate Islami should be banned


প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর, ২০১৩ ১২:১৯:৩৭
ধর্মীয় রাজনীতি মাদক ব্যবসার মতো: মওদুদী
অনলাইন ডেস্ক

কোরআন ও ইসলামের হেফাজতের জন্য সয়ং আল্লাহই যথষ্টে। এর জন্য জামায়াত বা হেফাজতে ইসলামের মতো সংগঠণের দরকার নেই। কোরআনে পরিস্কার বলা আছে. 'এই কোরআনকে আমিই হেফাজত করব।' সংগঠণ করেতো ইসলামকে হেফাজত করা যাবে না। শনিবার বাংলাদেশের এক জাতীয় দৈনিকে সাক্ষাত দিতে গিয়ে এ কথা বলেন অল ইণ্ডিয়া জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদীর ছেলে সাইয়েদ হায়দার ফারুক মওদুদী।

'ধর্ম ও  রাজনীতি: দক্ষিণ এশিয়া' শীর্ষক আন্তর্জাতিক গণবক্তৃতা ও সম্মেলন উপলক্ষে ৩ দিনের সফরে ঢাকা অবস্থান করছেন পাকিস্তানের এ ইসলামি চিন্তাবিদ।

ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে মাদক ব্যবসার সঙ্গে তুলনা করে ফারুক মওদুদী বলেন, আমার বাবা আমাদের সব ভাই-বোনকে সবসময় ধর্মভিত্তিক রাজনীতি কিংবা জামায়াতের রাজনীতি থেকে দুরে রেখেছেন। বিষয়টিকে তিনি মাদক ব্যবসার সঙ্গে তুলনা করেছেন। একজন মাদক ব্যবসায়ী যেমন চায় না তার সন্তানরা কেউ মাদক সেবন করুক, বাবাও তেমনি আমাদের জামায়াতের কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখতেন। এমনকি দূরে দাড়িয়ে কখনো জামায়াতের সমাবেশও দেখতে দিতেন না। আমাদের ৯ ভাই-বোনের কেউই জামায়াত রাজনীতির সঙ্গে জড়াননি। প্রত্যেকে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন পেশায় ভালো অবস্থানে আছে। তিনি বলেন, জামায়াত একটা ফ্যাসিস্টদের দল। এ দলে আমিরের অবস্থা সেনাপ্রধানের মতো। তাকে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। এসব দলকে নিষদ্ধি করতে হবে।

জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা পুত্র হায়দার ফারুক বলেন, ১৯৪৭ সালে জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধীতা করেছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে। এ অপরাধেই দুই রাষ্ট্রেই জামায়াতের রাজনীতি নিষদ্ধি করা দরকার। দেশের অসি্তত্বে যারা বিশ্বাস করে না তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকে না। তিনি বলেন, পাকিস্তান স্বাধীন হয়েছিল ধর্মীয় উদ্দেশ্যে। এ দেশ হয়েছে স্বাধীনতার উদ্দেশ্যে। রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহারের কারণেই পাকিস্তান এত সমস্যা জর্জরিত। পাকিস্তানি ইসলামি চিন্তাবিদ হায়দার ফারুক মওদুদির আজ বাংলাদেশ ত্যাগের কথা রয়েছে। 


Source:     http://www.bd-pratidin.com/2013/10/06/20302

Also http://www.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMTBfMDhfMTNfMV8xXzFfNzcyMzM=
 
মওদুদীপুত্র হায়দার ফারুক বললেনবাংলাদেশে জামায়াতের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই

'যে জামায়াত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিল, স্বাধীনতার ৪২ বছর পর সেই দল এখনো এ দেশে রাজনীতি করে কী করে?' প্রশ্নটি তুলেছেন জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ আবুল আলা মওদুদীর ছেলে হায়দার ফারুক মওদুদী। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, বাংলাদেশে জামায়াতের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। ধর্ম ও রাজনীতিবিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নিতে ঢাকায় এসে গত শুক্রবার বিভিন্ন গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
'ধর্ম ও রাজনীতি : দক্ষিণ এশিয়া' শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সেমিনারে যোগ দিতে গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসেন মওদুদীপুত্র ফারুক। এই সেমিনারের পাশাপাশি গত শুক্রবার একাধিক পত্রিকাকে সাক্ষাৎকার দেন তিনি। এ সময় তিনি ১৯৭১ সালে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পর্কে বলেন, 'মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করায় কাউকে ছাড় দেওয়া উচিত নয়। সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। আইনের চোখে অপরাধী হলে সবার সাজা হওয়া উচিত।'
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে ফারুক বলেন, 'শেখ সাহেবের (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) মৃত্যুর পর ক্ষমতাসীনরাই জামায়াতকে পতনের মুখ থেকে টেনে তুলেছে। সেই ধারাটা এখনো অব্যাহত আছে।'
এ প্রসঙ্গে ফারুক বলেন, স্বাধীনতার পর গঠিত বাংলাদেশ সরকারের প্রথম সিদ্ধান্ত ছিল পাঁচটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা। এর মধ্যে জামায়াতও ছিল। বাকি দলগুলো ছিল মুসলিম লীগ, পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি, নেজামে ইসলাম ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ায় জামায়াতসহ বাকি দলগুলো কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে জামায়াতসহ এসব দলকে আবারও বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ দেন। এসব দল শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতাকেই অস্বীকার করেনি, পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীকে গণহত্যাসহ নানা ধরনের যুদ্ধাপরাধ ঘটানোর কাজে সরাসরি সহযোগিতা করেছিল। তিনি বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করায় এই ধর্মভিত্তিক দলটিকে এ দেশের মাটিতে রাজনীতি করতে দেওয়া মোটেই উচিত নয়।
 হায়দার ফারুক মওদুদী স্পষ্টভাষায় বলেন, জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি হচ্ছে ধর্মের নাম ভাঙিয়ে সুবিধাবাদের রাজনীতি। জামায়াত নেতারা কখনো নিজেদের সন্তানকে বিপদের মুখে ঠেলে দিতে চান না। আর তাই জামায়াত যত সহিংসতায় জড়ায়, সেগুলোতে সব সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ মানুষ। আর এর ফায়দা লোটেন দলটির নেতারা।
 ফারুক জানান, তাঁর বাবা উপমহাদেশে জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বটে কিন্তু মওদুদীর ৯ সন্তানের কেউই দলটির রাজনীতিতে জড়াননি। বাবার রাজনৈতিক দলে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য তাঁদের ওপর পারিবারিক কোনো চাপও ছিল না। বরং তাঁরা যাতে রাজনীতিতে না জড়ান সে জন্য সব সময় সতর্ক দৃষ্টি রাখতেন তাঁদের বাবা। কিন্তু এর কারণটা কোনো দিন ছেলেদের বলেননি তিনি।
 পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বাংলাদেশের দলটির কোনো সম্পর্ক আছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হায়দার ফারুক বলেন, 'এ দুটি দল হচ্ছে একই শরীরের বাম ও ডান হাতের মতো। একটি মস্তিষ্ক অর্থাৎ কেন্দ্র দুই দেশের দলকেই নিয়ন্ত্রণ করছে।' এ সময় তিনি ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ও ধর্মের ভিত্তিতে দেশ গঠনের চিন্তার সরাসরি বিরোধিতা করেন। এ ছাড়া রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণার বিরুদ্ধেও মত দেন তিনি। তিনি বলেন, 'দেশ হচ্ছে একটা বড় ছাদ, যার নিচে সব ধর্মের মানুষ বাস করবে। যদি কোনো রাষ্ট্র সত্যিকারের গণতন্ত্রের চর্চা করে তাহলে সে দেশে রাষ্ট্রধর্ম বলে কিছু থাকতে পারে না। যদি কোনো রাষ্ট্র রাষ্ট্রধর্ম বলে কোনো কিছুর অস্তিত্বকে স্বীকার করে, তাহলে সেখানে গণতন্ত্র নয়, অবশ্যই অন্য কিছুর চর্চা হয়।
 উদারপন্থী এই ব্যক্তিত্বের অভিমত, যখন রাজনীতির ভেতরে ধর্ম ঢুকে যায়, ধর্মের ব্যাখ্যা দিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করা হয়, তখন সেটা মানুষকে হত্যার কাজে ব্যবহার করা হয়। এটা মনুষ্যত্বকে ধ্বংস করে দেয়।
 সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে হায়দার ফারুক বলেন, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের স্বাধীনতার আন্দোলনকে সমর্থন করেনি জামায়াতে ইসলামী। সে সময় পাকিস্তানের আন্দোলনকে 'নাপাকিস্তান' বলে আখ্যায়িত করেন মওদুদী। এরপর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সৃষ্টিরও বিরোধিতা করে দলটি। তিনি বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টির পর সে দেশে জামায়াত সুবিধা করতে পারেনি। তবে ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি হলে এ দলটি সামরিক সরকারের প্রত্যক্ষ সমর্থনে ফুলে-ফেঁপে ওঠে।
 ফারুক মওদুদী পেশাজীবনে ছিলেন পাইলট। বর্তমানে পাকিস্তানের লাহোরে কলামিস্ট হিসেবে সময় কাটছে তাঁর। ব্যক্তিগত যেকোনো কারণে ইংরেজি ভাষার ওপর তাঁর মস্ত বিরাগ। তাই সংবাদকর্মীদের উর্দু ভাষায় সাক্ষাৎকারটি দেন তিনি। স্বাধীনতার আগে একাধিকবার ঢাকায় এসেছিলেন বলেও জানান তিনি।