Saturday, October 1, 2016

BNP Minister Babar was Present in 21 Aug Grenade Attack Planning Meeting

জবানবন্দিতে মিজানুর রহমান
হামলার ষড়যন্ত্র বৈঠকে বাবর উপস্থিত ছিলেন
সমকাল প্রতিবেদক
বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার কিছুদিন আগে জোট সরকারের সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর বাসায় একাধিক ষড়যন্ত্রের বৈঠক হয়েছিল। একদিন ওই বৈঠকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর উপস্থিত ছিলেন। বাবর তার গাড়িতে করে পিন্টুর বাসায় এসেছিলেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের জনসভায় আর্জেস গ্রেনেড দিয়ে হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। মামলার ৬৮ নম্বর সাক্ষী সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার তৎকালীন কর্মকর্তা লে. কর্নেল মিজানুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন। নাজিমুদ্দিন রোডের বিশেষ এজলাস ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। বর্তমানে এই সাক্ষী চট্টগ্রামে নৌবাহিনীতে কর্মরত। আগামী ১৬, ১৭ ও ১৮ জুন সাক্ষীকে জেরার জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।

জবানবন্দিতে মিজানুর রহমান বলেন, জোট সরকারের উপমন্ত্রী পিন্টুর ভাই হুজি নেতা মাওলানা তাজউদ্দিনের নাম পরিবর্তন করে বাদল নামে পাসপোর্ট করা হয়। এর পর এটিএম আমিন ও লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম জোয়ারদারের সহায়তায় তাকে বিমানযোগে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, হামলার জন্য কোন জায়গা থেকে গ্রেনেড আনা হবে, কে গ্রেনেড ব্যবহার করবে এবং কে ঘটনাস্থলে গ্রেনেড পেঁৗছে দেবে সে বিষয়ে নীলনকশা তৈরি করা হয়। ওই সময় এই সাক্ষী সামরিক গোয়েন্দা সংস্থায় কর্মরত থাকায় ঘটনাগুলো প্রত্যক্ষভাবে অবলোকন করেন।

জবানবন্দিতে এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেনেড হামলাকারী হরকাতুল জেহাদ নেতাদের টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সাইফুল ইসলাম জোয়ারদার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। এর মধ্যে কিছু টাকা মেরে দেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।

নৌবাহিনীর এই কর্মকর্তা মিজান গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িত ১৩ জনের নাম আদালতে উল্লেখ করেন। এর মধ্যে পলাতক রয়েছেন_ সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা এটিএম আমীন, পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন ও সাইফুল ইসলাম জোয়ারদার। এ ছাড়া আবদুুস সালাম পিন্টু, মুফতি আবদুুল হান্নান, লুৎফুজ্জামান বাবর, ইয়াহিয়াসহ ১০ জন কারাগারে।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা করা হয়। এতে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন।
Source: http://www.samakal.net/print_edition/details.php?news=14&action=main&view=archiev&y=2013&m=06&d=07&option=single&news_id=349566&pub_no=1431


২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় জড়িত লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার (বর্তমানে বরখাস্ত ও পলাতক), তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও অন্য কারও সম্পৃক্ততার কথা গোপন করার জন্য মাওলানা তাজউদ্দিনকে ২০০৬ সালের অক্টোবরে সুকৌশলে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেয় ডিজিএফআই।

ডিজিএফআইয়ের জঙ্গি দমনসংক্রান্ত ব্যুরোর তৎকালীন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মিজানুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসংক্রান্ত দুটি মামলায় (হত্যা ও বিস্ফোরক) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ দেওয়া সাক্ষ্যে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, তাজউদ্দিনকে বিদেশে পাঠানোর জন্য ডিজিএফআই থেকে যেভাবে ব্যবস্থা করা হয়েছে, তাতে তাঁর এটা মনে হয়েছে।

বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই তাজউদ্দিন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের নেতা। এ দুই ভাইই ২১ আগস্ট মামলার আসামি। পিন্টু কারাগারে আর তাজউদ্দিন পলাতক আছেন।
সাক্ষ্যে মিজান আরও বলেন, ডিজিএফআইতে তাঁর কাজ ছিল দেশের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা। লে.কর্নেল সাইফুলের নির্দেশে হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নেতা আবদুস সালাম ও শেখ ফরিদকে টাকা দিয়ে আসতেন। এ ছাড়া মাওলানা শেখ ফরিদ, মুফতি শফিক, মাওলানা সাব্বির, হাফেজ আবু তাহেরসহ হুজির অন্য নেতাদের সঙ্গে লে. কর্নেল সাইফুল বৈঠক করতেন। এসব বৈঠকে মিজানুর রহমানও থাকতেন। তাঁর অবর্তমানে মেজর মুনির থাকতেন।

আদালতে মিজান আরও বলেন, হুজি নেতা মুফতি হান্নানকে যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ কেন্দ্রে (জেআইসি) জিজ্ঞাসাবাদ করে তার একটি সংকলন তিনি এ টি এম আমিন ও সাইফুল ইসলামকে দিতেন। জিজ্ঞাসাবাদে মুফতি হান্নান বলেছেন, তিনি মাওলানা তাহের ও আরেক সহযোগী নিয়ে ২০০৪ সালের ১৮ ও ১৯ আগস্ট তৎকালীন উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর বাসায় যান। সেখানে তাজউদ্দিনও ছিলেন। সেখানে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা করেন। ওই আলোচনার একপর্যায়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ওই বাসায় যান এবং কিছুক্ষণ থেকে চলে যান। পিন্টু তাঁদের জানান, হামলার জন্য গ্রেনেড ও টাকা তাজউদ্দিন সরবরাহ করবেন। এরপর মুফতি হান্নান চলে আসেন। পরে তাহের ও অন্য কারও মাধ্যমে টাকা ও গ্রেনেড মুফতি হান্নানকে পৌঁছে দেওয়া হয়। মুফতি হান্নান তাঁর লোকজনকে দিয়ে হামলা করান।

Source: http://prothom-alo.com/detail/date/2013-06-07/news/358510#Scene_5